যেকোনো যৌথ কাজে সফলতার জন্য নেতৃত্বের প্রয়োজন হয়। সেটি পরিবার থেকে শুরু করে দেশ গঠনেও পরিলক্ষিত। একটি পরিবারে যদি সঠিক নেতৃত্ব না থাকে, তবে সে পরিবারে বিশৃঙ্খলা দেখা দিবে। একজন ভাল নেতার অভাবে সমাজে হানাহানি, সহিংসতা বেড়ে যাবে এবং একটি দেশ নেতৃত্বের অভাবে উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হতে পারে না।
এইচ ও ডানেল এর মতে, “নেতৃত্ব হল সাধারণ লক্ষ্য অর্জনের জন্য জনগণকে সহযোগী হতে প্ররোচিত করার কাজ।” ছাত্রজীবন থেকেই নেতৃত্বের চর্চা করা দরকার। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন এবং লিডারশিপ ট্রেনিং প্রোগ্রাম গুলোতে যোগদানের মাধ্যমে নেতৃত্বের চর্চা করা যায়। বাস্তবতা হল, আমাদের দেশে সবক্ষেত্রে একজন দক্ষ এবং যোগ্যতাসম্পন্ন নেতার অভাব রয়েছে । একজন সফল নেতা সমাজের বিদ্যমান সমস্যাগুলো বুঝতে পারে এবং সে অনুযায়ী সমস্যাগুলো সমাধান করতে উদ্বুদ্ধ হয়।
সুতরাং, দেশের প্রশাসনে যুক্ত ব্যক্তিদের প্রয়াস চালাতে হবে যাতে যোগ্য নেতৃত্ব উঠে আসে। সফল নেতৃত্বের কারনে যেমন অনেক অসাধ্য সাধন করা যায়, তেমনি অনেক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
তবে সুখবর হল, নেতৃত্ব দেওয়ার গুনাবলি নিয়ে কেও জন্মগ্রহণ করে না। সঠিক চর্চা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে নেতৃত্বের গুনাবলি গড়ে তোলা সম্ভব। চলুন, মিলিয়ে নেয়া যাক আপনার মধ্যে একজন যোগ্য নেতৃত্বের গুণাবলি বিদ্যমান কিনাঃ
১। ইতিবাচকতা
যেকোনো কাজকে সফলতার শীর্ষে নিয়ে যেতে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দলের নেতার যদি মনোবল শক্ত না হয়, তবে দলের অন্যান্য সদস্যদেরও সেটি হতে বাধ্য। ইতিবাচক নেতারা শত বাধা বিপত্তির মুখেও দলকে সঠিক পথে পরিচালিত করে সফলতা অর্জন করেন। তারা আত্মবিশ্বাসের সাথে নিয়মিত বাধাগুলো টপকে গিয়ে পরিশেষে সফলতার সাক্ষাৎ পান।
২। যোগাযোগ
বহু মানুষের সাথে কাজ করার জন্য মানুষের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করার প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে যোগাযোগ দক্ষতার প্রয়োজন হয়। কর্মক্ষেত্রে উন্নতি অনেকটা নির্ভর করে যোগাযোগ দক্ষতার ওপর। সুষ্ঠু যোগাযোগ দক্ষতার মাধ্যমে কর্মীদের সাথে আরও ভাল সম্পর্ক গড়ে তোলা যায়। নিজেদের মধ্যে সুসম্পর্ক না থাকলে সেই প্রতিষ্ঠান কোনদিন উন্নতি করতে পারেনা। এটি অনেকটা গণসংযোগের মতই।
৩। সৃজনশীলতা
যেকোনো সমস্যাকে বিভিন্ন ভাবে সমাধান করার চিন্তাভাবনা করতে পারা নেতার অন্যতম গুণ। কর্মীদের নতুন চিন্তা করার স্বাধীনতা দিতে হবে। একজন যোগ্য নেতা তার সৃজনশীল চিন্তাধারা ছড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি অন্যকেও উৎসাহিত করেন তাদের চিন্তাভাবনা শেয়ার করার জন্য এবং তাদের সৃজনশীলতাকে সঠিক মূল্যায়ন করে থাকেন।
৪। দূরদৃষ্টি
একজন নেতার কি কাজ করছেন, কিভাবে অগ্রসর হবেন, কাজের ভবিষ্যৎ ফলাফল কি হতে পারে তা নিয়ে অবশ্যই ধারনা থাকা উচিত। অর্থাৎ তার কাজের উদ্দেশ্য জানা এবং তা সম্পর্কে অবগত থাকা প্রয়োজন। সুতরাং এসকল বিষয়ে স্পষ্ট ধারনা থাকা এবং তার সম্পর্কে আত্মবিশ্বাস বজায় রাখা অত্যাবশ্যক।
৫। অন্যকে জানা এবং বিনয়ী হওয়া
অন্যের দুর্বলতা, দক্ষতা সম্পর্কে অবগত হয়ে কাজ ভাগ করে দেওয়া এবং কাজ সম্পাদনে অনুপ্রাণিত করা দক্ষ নেতার বৈশিষ্ট্য। একজন রুক্ষ নেতার চাইতে বিনয়ি নেতার গুরুত্ব অনেক বেশি। দলের সবার সাথে সমান ব্যবহার করা, সুন্দরভাবে বিচার করা এসকল বিষয় চর্চা করা উচিত। কারন সবার সক্রিয় অংশগ্রহন না থাকলে কাজে সফলতা আসবে না।
It's great. Keep it up.
Thank you !